স্টাফ রিপোর্টার,ঈশ্বরদী ॥ আটঘরিয়া উপজেলার ৫ নং লক্ষিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আনোয়ার ও ইউনিয়ন পরিষদ সচিব মোঃ আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দূর্ণীতি ও স্বেচ্ছাচারীতার মাধ্যমে সরকারী অর্থ আত্নসাতসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার রাত সাড়ে আটটায় ঈশ্বরদী উপজেলা প্রেসক্লাবে লক্ষিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাত ইউপি সদস্যসহ ভূক্তভোগীরা ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিবের বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগের সুষ্ঠ তদন্ত, বিচার ও দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ হেলাল উদ্দীন। এছাড়াও ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিবের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাত সহ নানা অভিযোগ এনে বক্তব্য দেন, ইউপি সদস্য মোঃ শাহিন হোসেন, ইউপি সদস্য মোঃ আব্দুল লতিফ, ইউপি সদস্য আশরাফ সরদার, ইউপি সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম,সংরক্ষিত মহিলা সদস্য আলেয়া খাতুন ও শাহানা খাতুন।
বক্তারা লক্ষিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আনোয়ার ও ইউনিয়ন পরিষদ সচিব মোঃ আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দূর্ণীতি ও স্বেচ্ছাচারীতার মাধ্যমে সরকারী অর্থ আত্মসাত সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৫৪ মাস ধরে অভিযোগকারীদের সম্মানী ভাতা দেওয়া হয়নি। বিগত দু’বছর যাবত অভিযোগকারী ইউপি সদস্যদের নিয়ে পরিষদে কোন আলোচনা সভা করা হয়নি। অথচ চেয়ারম্যান ও সচিব মিলে সদস্যদের ভূঁয়া স্বাক্ষর ও সীল ব্যবহার করে বিভিন্ন কাজের অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাত করেছে। এলজি এসপি,টিআর, কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পে কাজ অভিযোগকারী ইউপি সদস্যদের নাম দেখিয়ে ভূঁয়া স্বাক্ষর ও সীল ব্যবহার করে উক্ত চেয়ারম্যান ও সচিব বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তুলে তারা আরও বলেন, এলজি এসপি প্রকল্পের বালুঘাটা ৯ নং ওয়ার্ড মসজিদ সংলগ্ন কাজ (প্রকল্প-১), ইসলামপুর মসজিদ সংলগ্ন রাস্তার কাজ( প্রকল্প-২) ও বালুঘাটা গোরস্থান সংলগ্ন রাস্তার কাজের( প্রকল্প-৩) সভাপতি করা হয় ইউপ সদস্য রফিকুল ইসলাম নাদুকে। অথচ প্রকল্প তিনটির সভাপতি হিসেবে এই কাজ সম্পর্কে তার কিছুই জানা নেই। ৭ নং ওয়ার্ডস্থ বাউকোলা মাদ্রাসা গেট ও আনোয়ার চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনের যাত্রী ছাউনি প্রকল্পের সভাপতি করা হয় ইউপি সদস্য আশরাফ আলীকে। আশরাফ আলী নিজেও জানেন না যে, তিনি এই প্রকল্পের সভাপতি। অথচ এই প্রকল্পের কাজের টাকা চেয়ারম্যান ও সচিব মিলে উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন। ইউপি সদস্যদের বেতন ভাতা দেওয়ার কথা বলে প্রতি বছর ৬/৭ লাখ টাকা ট্যাক্স হিসেবে আদায় করা হলেও অদ্যবধি অভিযোগকারী ইউপি সদস্যদের বিগত ৫৪ মাস ধরে কোন প্রকার বেতন ভাতা প্রদান না করে সমুদয় টাকা আত্মসাত করেছেন তারা দু’জন। শুধু তাই নয়, করোনাকালিন সময়ে সরকার ৫’শ পরিবারের অনুকুলে প্রনোদনা বাবদ ৫’শ টাকা করে বরাদ্দ দিলেও তারা বরাদ্দকৃত সব টাকাই আত্মসাত করেছেন। একই ইউনিয়নের ভিজিডি কার্ড বরাদ্দেও তারা ব্যাপক কারচুপি এবং ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচির কাজ দেওয়ার আগে অভিযোগকারীদের নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে এবং যেসব ইউপি সদস্যদের নিকট থেকে ৫০ হাজার করে টাকা নেওয়া হয়েছে তাদেরকে কাজ না দিয়ে চেয়ারম্যান তার পছন্দের ইউপি সদস্যদের পিআইসি করে কাজ না করেই টাকা উত্তোলন করে নিচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাত ইউপি সদস্যের দেওয়া অভিযোগ সম্বলিত বক্তব্যের বিষয়ে ৫ নং লক্ষিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ আনোয়ার বলেন, সংবাদ সম্মেলনে ইউপি সদস্যদের দেওয়া সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র মূলক। আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে মনোনয়নয় বাতিল করার জন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
একই অভিযোগের বিষয়ে ৫ নং লক্ষিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আব্দুর রাজ্জাক সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন আমি কোন অনিয়ম দূর্ণীতি করি নাই।
Leave a Reply